জি.এম.শিমুল রাঙ্গাবালী প্রতিনিধিঃ
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় এক গৃহবধূকে হাত-মুখ বেঁধে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে। তাকে নির্যাতনের পর গণধর্ষণ করে টাকা এবং স্বর্ণালঙ্কার লুট করা হয়েছে বলে দাবি করেন তার স্বামী।
শুক্রবার রাতে উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরমার্গারেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার সন্দেহে চরমার্গারেট গ্রামের মজিবর শরিফের ছেলে শাকিল (২০) ও চরলক্ষ্মী গ্রামের সিদ্দিক হোসেনের ছেলে আল হাদীকে (২২) আটক করেছে পুলিশ।
প্রতিবেশীরা জানান, প্রায় ১৫ দিন আগে গৃহবধূর ৯ বছরের ছেলেকে ঢিল নিক্ষেপ করে শাকিলের ভাই। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে ঝগড়াঝাটি হয়। শুক্রবার সালিশ-মীমাংসাও হওয়ার কথা ছিল কিন্তু শাকিলের পরিবার সালিশ বৈঠকে রাজি হয়নি।
ওই গৃহবধূর স্বামী বলেন, আসরের নামাজের আগে তিনি পার্শ্ববর্তী এলাকায় গিয়েছিলেন। তিনি যখন বাড়ি ফিরছিলেন তখন রাত ৯টা কিংবা পৌনে ৯টা। পথিমধ্যে তার মোবাইলে বাড়ি থেকে ফোন আসে।
পরে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। তার কাছে বিষয়টি সন্দেহ হলে তিনি দ্রুত বাড়িতে ছুটে যান। গিয়ে ছেলেমেয়ের কান্নার শব্দ শুনে ঘরে ঢুকেন। তখন বাতি বন্ধ ছিল।
টর্চলাইট মেরে দেখেন, তার স্ত্রী টেবিলের সঙ্গে হাত বাঁধা, নাক-মুখ ও চোখ ওড়না দিয়ে বাঁধা। পরে ডাক-চিৎকার দিলে লোকজন আসেন। এর মধ্যে তার স্ত্রী জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তাকে দ্রুত গলাচিপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান তিনি। সেখান থেকে পটুয়াখালী নেয়া হয়।
তিনি দাবি করেন, তার স্ত্রীকে শারীরিক নির্যাতন এবং গণধর্ষণ করা হয়। পরে ঘর থেকে দেড় লক্ষাধিক টাকা এবং স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় তিনজন জড়িত আছেন বলে তথ্য দিয়েছেন তিনি।
প্রতিবেশীরা জানান, ভিকটিম মুমূর্ষু অবস্থায় ছিল; পরনের পোশাক এলোমেলো ছিল।
শনিবার দুপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কলাপাড়া সার্কেল) আহম্মদ আলী ও উপজেলা নারীবিষয়ক কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বে) তাসলিমা আক্তার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
রাঙ্গাবালী থানার ওসি মো. আলী আহম্মেদ বলেন, ভিকটিমের যারা আত্মীয়স্বজন তারা কেউ এলাকায় নেই। তারা পটুয়াখালী গেছেন। গলাচিপা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলছেন, একজন রোগী এসেছিল। রোগীর বক্তব্য অনুযায়ী তাকে মারধর এবং ধর্ষণ করেছে। আমরা তাকে পটুয়াখালী পাঠিয়ে দিয়েছি। ধর্ষণ কিনা তা বলতে পারছি না।
ওসি আরও বলেন, ঘটনার তদন্ত চলছে। এখনও মামলা হয়নি। তবে জড়িত সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুইজনকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কলাপাড়া সার্কেল) আহম্মদ আলী বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা যায় গৃহবধূকে নির্যাতন করা হয়েছে। তবে ধর্ষণের বিষয়টি এখনও বলা যাচ্ছে না। মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাশফাকুর রহমান বলেন, বিষয়টি জেনেই আমি ভিকটিমের স্বামীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি ঘটনায় জড়িত তিনজনের নাম বলেছেন। বিষয়টি আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখব।